শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৭ অপরাহ্ন
শামীম আহমেদঃ চলছে করোনার দ্বিতীয় মেয়াদের ‘কঠোর লকডাউন’। ১৩ দফা বিধিনিষেধ থাকলেও তা যেন তোয়াক্কা করছে না বরিশালের মানুষ। সবই স্বাভাবিক। করোনা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও।
ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে নগরবাসী। নারীরাই বেশি ছুটছেন ঈদ শপিংয়ে।
নগরীর চকবাজারে উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি যেন কাগজেকলমে। ফলে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে দুজনের মৃত্যু ও ৬২ জন আক্রান্ত হয়েছে।
রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যাও ছিল তুলনামূলক বেশি। সোমবার সকাল থেকে বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম সদর রোড, গীর্জা মহল্লা, কাটপট্টি, চকবাজার, বাজার রোড, পোর্ট রোড, জেলখানার মোড়, নতুনবাজার, নতুল্লাবাজ, সিএন্ডবি রোড চৌমাথা, বটতলা চৌরাস্তা, বাংলা বাজার, রূপাতলী, লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার সবকটি রাস্তায় সবধরনের যানবাহন চলতে দেখা গেছে।
চেকপোস্ট আগের মতো থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যবেক্ষণ ছিল কিছুটা শিথিল। আগের তুলনায় সড়কে মোটরসাইকেল, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, টেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশার সংখ্যা বেশি। মূল সড়কগুলোতে তো আছেই, অলিগলিতে দেখা যাচ্ছে মানুষের উপড়েপড়া ভিড়।
কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই, যে যার মতো বের হচ্ছে। যদিও এসব নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নগরীর কাটপট্টি রোডে ঈদ বাজার করতে এসেছেন শাম্মি আক্তার। বললেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বাজারে এসেছি। কিন্তু এত মানুষ দেখে মনে হচ্ছে আসাটা উচিত হয়নি।
কারণ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে অন্যরা উদাসীন। চকবাজারের কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, সামনে ঈদ আসছে। এর মধ্যে লকডাউন। প্রায় এক বছর কোনো বেচাকেনা করা যায়নি।
এভাবে চললে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। বরিশাল বিভাগে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে আক্রান্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ২৬৭ জন।
সোমবার বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর ও শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় মোট নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ জন, এর মধ্যে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ জন রয়েছেন।
বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মোট চিকিৎসাধীন আছেন ৭৮ জন, এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ২৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট নমুনা জমা পড়েছে ১৯১টি। এর মধ্যে ৫৩টির নমুনা করোনা পজিটিভ হয়। পজিটিভের হার শতকরা ২৭ দশমিক ৭৪।
বরিশাল জনস্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব মানুওয়ারুল ইসলাম অলি বলেন, আজকে যে পরিস্থিতি, তা অত্যন্ত ভয়ংকর।
সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে মানুষের আরও একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত দাস বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা তৎপর রয়েছি।
মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। তাছাড়া আমরা অভিযান চালিয়ে জরিমানাও আদায় করছি। আজও বরিশালে দুটি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে।